সংজ্ঞা : একই ভ্রূণীয় কোষস্তর থেকে উৎপন্ন হয়ে এক বা একাধিক ধরনের কিছু সংখ্যক কোষ জীবদেহের কোন নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করে সমষ্টিগতভাবে একটা সাধারণ কাজে নিয়োজিত থাকলে ঐ কোষসমষ্টি এবং তাদের কর্তৃকনিঃসৃত অন্তঃকোষীয় পদার্থ বা ধাত্র বা মাতৃকাকে একত্রে টিস্যু বলে। যেমন- রক্ত এক এক ধরনের তরল যোজক কলা।
টিস্যুর প্রকারভেদ :
বহুকোষী প্রাণির দেহে নিম্নের চার প্রকার টিস্যু পাওয়া যায়-
১। এপিথেলিয়াল টিস্যু বা আবরণী কলা : যে সকল টিস্যু দেহের বিভিন্ন অঙ্গের মুক্ত তলকে আচ্ছাদিত করে আবরণ তৈরি করে, তাদেরকে এপিথেলিয়াল টিস্যু বা আবরণী কলা বলে ।
২। কানেক্টিভ টিস্যু বা যোজক কলা : যে সকল টিস্যু দেহের বিভিন্ন অঙ্গের বা একই অঙ্গের বিভিন্ন অংশের মাঝে সংযোগ রক্ষা করে, তাদেরকে কানেকটিভ টিস্যু বা যোজক কলা বলে ।
৩. মাসকুলার টিস্যু বা পেশি কলা : যে টিস্যুর সংকোচন প্রসারণের মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন অঙ্গের সঞ্চালন ঘটে তাকে মাসকুলার টিস্যু বা পেশি কলা বলা হয় ।
৪ । নার্ভ টিস্যু বা স্নায়ু কলা : যে টিস্যু বিভিন্ন উদ্দীপনা গ্রহণ করে তদানুযায়ী সাড়া প্রদান করে, তাকে নার্ভ টিস্যু বা স্নায়ু কলা বলে ।
আরও পড়ুন : আবরণী ও যোজক কলা কাকে বলে? এদের প্রকারভেদ, বৈশিষ্ট ও কাজ
কোষ এবং টিস্যুর সম্পর্ক কি ?
কোষ এবং টিস্যুর সম্পর্ক : কোষ হলো টিস্যুর গঠনমূলক ও কার্যকরী একক। যেমন- লোহিত রক্ত কণিকা, শ্বেত রক্ত কণিকা এবং অণুচক্রিকা বিভিন্ন ধরনের রক্ত কোষ। অপরপক্ষে, টিস্যু হল একই গঠন ও কাজ বিশিষ্ট একাধিক কোষ একই স্থান হতে উৎপন্ন হয়ে একটা সাধারণ কাজ করতে থাকলে এ কোষসমষ্টি এবং তাদের কর্তৃক সৃষ্ট অন্তঃকোষীয় পদার্থকে একত্রে টিস্যু বলে। যেমন- রক্ত এক ধরনের তরল যোজক টিস্যু।
টিস্যু ও অঙ্গের মধ্যে সম্পর্ক কি ?
উত্তর : একই ভ্রূণীয় কোষ থেকে উৎপন্ন হয়ে এক বা একাধিক ধরনের কিছু সংখ্যক কোষ জীবদেহের কোনো নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করে সমষ্টিগতভাবে একটা কাজে নিয়োজিত থাকলে ঐ কোষগুলোকে সমষ্টিগতভাবে টিস্যু বলে। আবার এক বা একাধিক টিস্যুর সমন্বয়ে গঠিত এবং নির্দিষ্ট কার্যসম্পাদনে সক্ষম প্রাণিদেহের অংশবিশেষকে অঙ্গ বলে।
অর্থাৎ আমরা বলতে পারি, টিস্যুর গঠনে অঙ্গ ভূমিকা না রাখলেও একটি অঙ্গে একই বা একাধিক ধরনের টিস্যু থাকার কারণে অঙ্গটি তার নির্দিষ্ট কাজ করতে পারে। আর এভাবেই টিস্যু ও অঙ্গ পরস্পরের মধ্যে সম্পর্কযুক্ত?