সংজ্ঞা : যে সমাসে সংখ্যাবাচক বিশেষণ পূর্বে বসে সমষ্টি বা সমাহার বুঝায় তাকে দ্বিগু সমাস বলে। এ সমাসে সমাস নিষ্পন্নকারী পদটি বিশেষ্য পদ হয়।
দ্বিগু সমাসের উদাহরণ :
- চার ভুজের সমাহার = চতুর্ভুজ
- নব রত্নের সমাহার = নবরত্ন
- শত বর্ষের সমাহার = শতবার্ষিকী
- চার মোহনার সমাহার = চৌমোহনী
- তিন মাথার মিলন = তেমাথা
- তিন কালের সমাহার = ত্রিকাল
- চার অঙ্গের সমাহার = চতুরঙ্গ
- শত অব্দের সমাহার = শতাব্দী
- সপ্ত ঋর্ষির সমাহার = সপ্তর্ষি
- তিন ভুবনের সমাহার = ত্রিভুবন
- চার পদের সমাহার = চতুষ্পদ
- তিন রত্নের সমাহার = ত্রিরত্ন
- চার রাস্তার মিলন = চৌরাস্তা
- তিন তারের সমাহার = সেতার
- পঞ্চ বটের সমাহার = = পঞ্চবটি
- পঞ্চ নদের সমাহার = পঞ্চনদ
- সাত সমুদ্রের সমাহার = সাতসমুদ্র
- সপ্ত অহের সমাহার = সপ্তাহ
আরও পড়ুন : বহুব্রীহি সমাস কাকে বলে?কত প্রকার।প্রত্যেকটির সংজ্ঞা সহ উদাহরণ
অব্যয়ীভাব সমাস
সংজ্ঞা : যে সমাসে পূর্বপদে অব্যয় থাকে এবং অব্যয়ের অর্থই প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয় তাকে অব্যয়ীভাব সমাস বলে।
অব্যয়ীভাব সমাসের ব্যাসবাক্যে অব্যয়ের নাম বলা বা ধরনের উল্লেখ হয় না, কেবল অব্যয়ের অর্থযোগে ব্যাসবাক্যটি রচিত হয়।
সামীপ্য, পর্যন্ত, বীপ্সা, সাদৃশ্য, অভাব, অনতিক্রম্যতা, পশ্চাৎ, অতিক্রান্ত, ঈষৎ, যোগ্যতা, বিরোধ, ক্ষুদ্র প্রভৃতি অর্থে অব্যয়ীভাব সমাস হয়।
অব্যয়ীভাব সমাস এর উদাহরণ :
সামীপ্য অর্থে :
- কূলের সমীপে = উপকূল
- নগরীর সমীপে = উপনগরী
- কণ্ঠের সমীপে = উপকণ্ঠ
- অক্ষির সমীপে = সমক্ষ
পর্যন্ত অর্থে :
- কন্ঠ পর্যন্ত = আকণ্ঠ
- পা থেকে মাথা পর্যন্ত = আপাদমস্তক
- জীবন পর্যন্ত = আজীবন
- সমুদ্র থেকে হিমাচল পর্যন্ত = আসমুদ্রহিমাচল
বীপ্সা অর্থে :
- রোজ রোজ = হররোজ
- ক্ষণ ক্ষণ = অনুক্ষণ
- দিন দিন = প্রতিদিন
- ক্ষণ ক্ষণ = প্রতিক্ষণ
সাদৃশ্য অর্থে :
- বনের সদৃশ = উপবন
- শহরের সদৃশ =উপশহর
- গ্রহের তুল্য = উপগ্রহ
- দ্বীপের সদৃশ = উপদ্বীপ
- নদীর সদৃশ = উপনদী
- ভাষার সদৃশ = উপভাষা
আরও পড়ুন : কর্মধারয় সমাস কাকে বলে?কত প্রকার।প্রত্যেক প্রকারের সংজ্ঞা সহ উদাহরণ
অভার অর্থে :
- ভিক্ষার অভাব = দুর্ভিক্ষ
- মিলের অভাব = গরমিল
- ভাবনার অভাব = নির্ভাবনা
- জলের অভাব = নির্জল
- আমিষের অভাব = নিরামিষ
- উৎসাহের অভাব = নিরুৎসাহ
অনতিক্রম্যতা অর্থে :
- শক্তিকে অতিক্রম না করে =যথাশক্তি
- শাস্ত্রকে অতিক্রম না করে = যথাশাস্ত
- সাধ্যকে অতিক্রম না করে = যথাসাধ্য
- রীতিকে অতিক্রম না করে = যথারীতি
- ইচ্ছাকে অতিক্রম না করে = যথেচ্ছা
পশ্চাৎ অর্থে :
- গমনের পশ্চাৎ=অনুগমন
- তাপের পশ্চাৎ = অনুতাপ
অতিক্রান্ত অর্থে :
- বেলাকে অতিক্রান্ত = উদ্বেল
- শৃঙ্খলাকে অতিক্রান্ত = উচ্ছৃঙ্খল
ঈষৎ অর্থে :
- ঈষৎ নত = আনত
- ঈষৎ রক্তিম = আরক্তিম
যোগ্যতা অর্থে :
- গুণের যোগ্য = অনুগুণ
- প্রেরণার যোগ্য = অনুপ্রেরণা
- রূপের যোগ্য = অনুরূপ
- ভাবের যোগ্য = অনুভাব
বিরোধ অর্থে :
- বিরুদ্ধ কূল = প্রতিকূল
- বিরুদ্ধ বাদ = প্রতিবাদ
ক্ষুদ্র অর্থে :
- ক্ষুদ্র শাখা = প্রশাখা
- ক্ষুদ্র অঙ্গ = প্রত্যঙ্গ
- ক্ষুদ্র বিভাগ = উপবিভাগ
- ক্ষুদ্র নদী = শাখানদী