ভাবসম্পসারক - অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে

মূলভাব : 

অন্যায়কারী এবং অন্যায় সহ্যকারী উভয়েরই ধ্বংস অনিবার্য ।

সম্প্রসারিত ভাব : 

মানুষ সামাজিক জীব । সমাজে বাঁচতে হলে মানুষের কতকগুলো দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয়। এ দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের মাধ্যমেই মানুষ সমাজে মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায়ের পৃথিবীতে মানুষকে সঠিক পথ বুঝে চলতে হয়। যারা সঠিক পথে চলতে পারে না তারা প্রকৃত মানুষ নয়। 

মানুষ বিভিন্নভাবে অন্যায় করে কেউ ইচ্ছাকৃত আবার কেউ অনিচ্ছাকৃত এ অন্যায়কারী জাতি, দেশ ও সমাজের জন্যে ক্ষতিকর। সমাজে এমন লোক আছে যারা সরাসরি অন্যায় করে না; কিন্তু প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অন্যায়কারীকে মদদ দেয় । এ মদদ পেয়ে অন্যায়কারীর উৎসাহ বেড়ে যায় । সে হয়ে ওঠে বেপরোয়া। এখানে অন্যায়ের মদদ দানকারী এবং অন্যায়কারীরা সমান অপরাধী 

মন্তব্য : 

সকল অন্যায়ই সমাজের জন্য ক্ষতিকর। সমাজে শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখতে হলে অন্যায়ের প্রতিরোধ ও প্রতিবাদ করতে হবে 

- একই ভাব সম্প্রসারণ এর অন্য আর একটি প্রতিলিপন -

মূলভাব : 

অন্যায় যে করে এবং অন্যায় যে সহ্য করে দুজনেই সমান অপরাধে অপরাধী। এজন্য প্রতিটি মুহূর্তে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে। অন্যায়কে কখনোই প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। 

সম্প্রসারিত ভাব:

একজন মানুষের যেমন মানুষ হিসেবে কতগুলো অধিকার রয়েছে ঠিক তেমনি মানুষ হিসেবে তার অনেকগুলি দায়িত্বও রয়েছে। আর এই দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়েই মানুষের অধিকার অর্জিত হয়। অন্যায় না করা এবং অন্যায়ের সহ্য না করা এ দুটি মানুষের দায়িত্ব হিসেবে বর্ধিত। অন্যায় করলে মানুষের ক্ষতি সাধিত হয়। যে ব্যক্তি অন্যায় করবে সে অবশ্যই শাস্তিযোগ্য অপরাধি। 

ক্ষমা একটি মহৎ গুণ হলেও সব সময় মানুষকে সর্বক্ষেত্রে ক্ষমা করা যাবে না। তাহলে সমাজের মধ্যে অন্যায়, অবিচার, জুলুম - নির্যাতন এগুলো বেড়ে যাবে। কারণ, অন্যায়কারীর যদি উপযুক্ত সাজা না হয় তাহলে সমাজের মধ্যে আরও বিশৃঙ্খলা দেখা দিবে। ফলে সমাজ হয়ে উঠবে অন্যায় এবং অবিচারের লীলা ক্ষেত্র। এবং মনুষ্য বসবাসের অনুপযোগী। তাই সবার কল্যাণের জন্য অবশ্যই অন্যায়কারীকে শাস্তি প্রদান করিতে হইবে। কোন ক্ষেত্রেই অন্যায়কারীকে ক্ষমা করা উচিত নয়। 

তাই যে অন্যায় করে এবং অন্যের সহ্য করে উভয়ই ঘৃণা যোগ্য। প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধের মাধ্যমে সমাজের সকল অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে সকলকে রুখে দাঁড়াতে হবে। তবেই সমাজে শান্তি ফিরে আসবে। এবং সমাজ সুখ শান্তিতে ভরপুর হয়ে যাবে। অন্যায়কারী এবং অন্যায় সহ্যকারী দুজনকেই শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শুধু অন্যায়কারীকে শাস্তি দিলে হবে না তাকে প্ররোচনাকারী এবং অন্যায় সহ্যকারী সকলকে একসাথে শাস্তি দিতে হবে। 

মন্তব্যঃ 

আল্লাহর রাসূল সাঃ বলেছেন:- যখন তোমরা সমাজের মধ্যে কোন অন্যায় দেখবে তখন তোমার হাত দ্বারা তুমি বাধা দেবে। যদি সেটা তোমার পক্ষে সম্ভব না হয় তাহলে মুখ দ্বারা বাধা দেবে। আর যদি সেটাও সম্ভব না হয় তাহলে অন্তত মনে মনে সেই কাজ কে ঘৃণা করবে। আর সেটা হলো সবচেয়ে দুর্বল ঈমানের পরিচয়।

Post a Comment

0 Comments

Bottom Post Ad