উপস্থাপনা :
ইংরেজি ভাষায় একটা প্রবাদ আছে- Necessity is the mother of invention. অর্থাৎ, প্রয়োজনের তাগিদেই আবিষ্কারের জন্ম । আধুনিক যুগ বিজ্ঞানের যুগ। মানুষ আল্লাহপ্রদত্ত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে নিত্যনতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে সভ্যতার চরম উন্নয়ন সাধন করেছে। বিজ্ঞানের প্রসার ও বিকাশ ঘটিয়ে মানুষ অনেক অসাধ্য সাধন করতে সক্ষম হয়েছে। ফলে জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটেছে এবং তা খুব সহজ-সরল হতে সাহায্য করেছে।
বিজ্ঞানের পরিচয় :
বিজ্ঞান’ অর্থ বিশেষ জ্ঞান। এর ইংরেজি প্রতিশব্দ Science. মানুষের যে জ্ঞানের মাধ্যমে অভিনব আবিষ্কার সম্ভব হয়েছে তার নামই বিজ্ঞান ।
বিজ্ঞানের অভিযান :
মানুষের কল্যাণের নিমিত্ত বিজ্ঞানের অভিযান দুরন্ত দুর্বার এবং বাধা-বন্ধনহীন। বিজ্ঞানের কাছে অসম্ভব, অপ্রতিরোধ্য বা অগম্য বলে কিছু নেই। বিংশ শতাব্দীতে বিজ্ঞানের বিস্ময়কর অভিযানে মানবসমাজ আজ বিস্মিত ও উদ্বেলিত।
আরও দেখুন : বিজ্ঞানদৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান – রচনা (২০ পয়েন্ট ) | পিডিএফ
বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কার :
বিজ্ঞানের বিস্ময়ের শেষ নেই। আজকের আধুনিকতা অনাগত ভবিষ্যতে সনাতনে রূপ নিচ্ছে। বিজ্ঞানের পদচারণা অজানা, অচেনা ও অনাবিষ্কৃতের দিকে। প্রতিদিন বিজ্ঞান তার আবিষ্কারের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করছে। জন এল বেয়ার্ড টেলিভিশন, বিজ্ঞানী মর্স টেলিগ্রাম, আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল টেলিফোন, রাইট ব্রাদার্স উড়োজাহাজ আবিষ্কার করে পৃথিবীকে চমকে দেন। কিন্তু বর্তমান সময়ের নব আবিষ্কার ঐগুলোকে চমকের প্রাথমিক যাত্রা বলে প্রমাণ করেছে।
বিজ্ঞানের ওপর নির্ভরশীলতা :
বিজ্ঞান আমাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে তার নিপুণ হাত সম্প্রসারিত করেছে। প্রতিদিন-প্রতিক্ষণ আমরা বিজ্ঞানের আবিষ্কার ছাড়া অচল হয়ে পড়ি। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দাঁতের মাজন, টুথপেস্ট, হাত ধোয়ার বেসিন বা সাওয়ার, গ্রামের টিউবওয়েল ইত্যাদি ব্যবহার করতে হচ্ছে। আমাদের প্রতিটি কর্মের সহায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজ্ঞান এবং আমরা হয়ে পড়েছি বিজ্ঞাননির্ভর।
দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান :
দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান আমাদের নিত্যসঙ্গী। দাঁত ব্রাশের জন্য সুঘ্রাণসমৃদ্ধ পেস্ট, রান্নার জন্য গ্যাস, অফিসে যেতে দ্রুততম এসি গাড়ি, ফ্যান, ফোন ও ফ্যাক্স এসবই তো বিজ্ঞানের কল্যাণেই সম্ভব হয়েছে।
পারিবারিক জীবনে বিজ্ঞান :
আমাদের পারিবারিক জীবনের সর্বত্র’ বিজ্ঞান এনে দিয়েছে সভ্যতার স্পর্শ। ভোরের সংবাদপত্র সমগ্র পৃথিবীটাকে যেন আমাদের ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে নিয়ে আসে। অন-লাইনে ঘরে বসেই আমরা রাত ১২ টার পর সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর জানতে পারি। পৃথিবীর মানুষের সুখ-দুঃখের চিত্র বেতারে শুনি, টেলিভিশনে দেখি। এসবই মানুষের জন্য বিজ্ঞানের কল্যাণময় অবদান।
আরও দেখুন : কৃষিকাজে বিজ্ঞান- বাংলা রচনা ২০ পয়েন্ট- pdf
মানব কল্যাণে বিজ্ঞান :
বিজ্ঞান মানবজাতির বিস্ময়কর সাফল্য। মানুষের প্রকৃত কল্যাণসাধনই বিজ্ঞানের উদ্দেশ্য। আমাদের সমাজজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবদান অনস্বীকার্য। মানব ইতিহাসের গোড়া থেকেই লক্ষ্য করা গেছে যে, বিজ্ঞানের জন্ম হয়েছে জীবনকে সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত করে গড়ে তোলার জন্য।
মানবকল্যাণে আধুনিক বিজ্ঞান :
মৌলিক সমস্যার সমাধান :
আধুনিক সভ্যতা ও বিজ্ঞান :
আধুনিক সভ্যতা গঠনে বিজ্ঞানের অবদান সর্বাধিক। সভ্যতাকে আরও উচ্চ শিখরে পৌঁছানোর জন্য মানুষের বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ঊনবিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞান-সভ্যতা বিংশ শতকে চূড়ান্ত উন্নতি লাভ করেছে। দ্রুত উৎপাদনের তাগিদে নতুন নতুন যন্ত্র আবিষ্কারের হিড়িক পড়ে যায়। বিজ্ঞানের দানে মুহূর্তেই জানা যায় বিশ্বের খবরাখবর।
আরও পড়ুন :- দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা ১৫ পয়েন্ট-Class 6,7,8,9,10| পিডিএফ
দুরারোগ্য ব্যাধিতে আজ আর মানুষকে অকালে প্রাণ দিতে হয় না। বিজ্ঞান চিকিৎসাক্ষেত্রে নিত্যনতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে জটিল রোগের উপশম ঘটাচ্ছে। বিজ্ঞানের আশ্চর্য ক্ষমতা বলে মরুর বুকে আজ শস্য উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। বিজ্ঞানের অসীম শক্তিকে মানুষ তার হাতের মুঠোয় নিয়েছে। আদিম যুগের মতো মানুষ আজ আর প্রকৃতির কাছে অসহায় নয়। বিজ্ঞান মানুষের দুর্বলতা আর অক্ষমতা দূর করতে সক্ষম হয়েছে।
কৃষিতে বিজ্ঞান :
কৃষি কাজে আধুনিক পদ্ধতি বিজ্ঞানের অবদান। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের জন্য ট্রাকটর, পাওয়ার টিলার, সিডলিং, লেডার, গভীর-অগভীর নলকূপ ব্যবহৃত হচ্ছে। উন্নত বীজের পাশাপাশি উন্নত সার ইউরিয়া, পটাশ, ফসফরাস ইত্যাদি ব্যবহার হচ্ছে।
পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার জন্য কীটনাশক ব্যবহার হচ্ছে। BRRI এর উন্নত বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে উচ্চ ফলনশীল ধান উৎপাদন করছে। যেমন- ব্রি-ধান ৪২, ব্রি-ধান ৪৩। ফলে ফসল উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের খাদ্যাভাব বেশ খানিকটা দূর হয়েছে।
প্রকৌশল ক্ষেত্রে বিজ্ঞান :
সভ্যতার উন্নতি ও বিকাশে প্রকৌশল বিজ্ঞানের অবদান অনস্বীকার্য। প্রকৌশল বিজ্ঞান নানা অসম্ভবকে সম্ভব করে। আধুনিক সভ্যতার ক্রমবিকাশে প্রতিনিয়ত গড়ে উঠছে নতুন নতুন দালানকোঠা। অত্যাধুনিক রাস্তা, হাইওয়ে এবং টুইন টাওয়ারের মতো বিচিত্র স্থাপনা। এসব প্রকৌশল কাজে বিজ্ঞানের আবিষ্কৃত কলাকৌশল ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই বিজ্ঞান মানব সভ্যতাকে নিয়ে গেছে আরো একধাপ এগিয়ে।
শিল্পে বিজ্ঞান :
বর্তমান যুগে যে দেশ শিল্পে যত উন্নত সে দেশ অর্থনীতিতে তত উন্নত। আধুনিক সভ্যতা উন্নত শিল্পকারখানা এবং মেশিনারীর ওপর নির্ভরশীল। শিল্পোন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বিজ্ঞানের অবদান। বিজ্ঞান শিল্পায়নকে দক্ষ এবং সহজ করেছে। শিল্পায়ন আমাদের বিদেশ নির্ভরশীলতা হ্রাস এবং লক্ষ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থানে সহায়তা করছে।
আরও দেখুন : রচনা : বাংলাদেশের পোশাক শিল্প ( ২০ পয়েন্ট ) – PDF
চিকিৎসায় বিজ্ঞান :
বিজ্ঞানের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা হচ্ছে এবং এইডস এর প্রতিষেধক তৈরির চেষ্টা চলছে। বড় বড় রোগগুলো বাদ দিলেও ছোটখাট যেমন- ডায়রিয়া ছিল একসময় অপ্রতিরোধ্য। আজকাল সে ডায়রিয়া সামান্য ওরস্যালাইনের কাছে হার মানছে ।
অবকাঠামো নির্মাণে বিজ্ঞান :
যোগাযোগে বিজ্ঞান :
বিজ্ঞান বিশাল পৃথিবীকে আজ আমাদের ঘরের কোণে নিয়ে এসেছে। মানুষ আজ লন্ডন থেকে প্যারিস, প্যারিস থেকে ওয়াশিংটন, ওয়াশিংটন থেকে বেইজিং চলে যাচ্ছে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে। যোগাযোগ ব্যবস্থা হয়েছে আরো অনেক আধুনিক ও উন্নত। ঘরে বসে সেকেন্ডের মধ্যে কোটি কোটি মাইল দূরের কারো সাথে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কুশল বিনিময় করা যায়। এসবই মানবকল্যাণে বিজ্ঞানের অবদান।
আরও পড়ুন : রচনা : সংবাদপত্র (২০ পয়েন্ট) – PDF
প্রাত্যহিক জীবনে বিজ্ঞান :
বর্তমান জীবনের সর্বক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবিসংবাদিত প্রাধান্য লক্ষণীয়। প্রভাতের শয্যাত্যাগ থেকে রাতের শয্যাগ্রহণ পর্যন্ত বিজ্ঞান মানুষের নিত্য সহচর। শহুরে জীবন বিজ্ঞানের অবদানের কাছে সম্পূর্ণ মুখাপেক্ষী। সকালে শয্যাত্যাগ করতে না করতেই কলে পানি এসে যায়। প্রয়োজন মতো কখনো সে পানি উষ্ণ কখনো বা শীতল। গরমের সময় বৈদ্যুতিক পাখা না হলে আমাদের চলে না।
বিজ্ঞানের অপকারিতা :
বিজ্ঞান একটি শক্তি। এ শক্তির ব্যবহার যেমন আমাদের জন্য কল্যাণকর, তেমনি এ শক্তির অপব্যবহারও অকল্যাণ বয়ে আনে। এটম বোমা, হাইড্রোজেন বোমা, ডিনামাইট, বোমারু বিমান, ট্যাংক, সাবমেরিন ইত্যাদি আবিষ্কারের ফলে মানবজীবনে নেমে এসেছে নিদারুণ ভীতি।
বিজ্ঞানচেতনার প্রসার :
সেই আদিম যুগে গোষ্ঠীবদ্ধ যাযাবর মানুষের জীবনে যুগান্তর আনলো আগুনের আবিষ্কার আর কৃষিকার্য প্রচলন। সেই সময় গড়ে ওঠল ছোট ছোট গ্রাম। উদ্ভাবিত হলো আদি কৃষিযন্ত্র ‘লাঙল’। মানুষ ক্ষেতে জলসেচের জন্য তার বৈজ্ঞানিক বৃত্তিকেও কাজে লাগাতে শিখল। শস্য সংরক্ষণ, ফসল থেকে আরও নানা প্রয়োজনীয় সামগ্রী (যেমন; কার্পাস থেকে সূতা) বানাতে শিখল, কুমোরের চাকা ঘুরিয়ে মানুষ বানাতে শুরু করল নানা ধরনের মাটির পাত্র। ঐ সময় বয়ন শিল্পেরও উদ্ভব ঘটে।
ভারি জিনিস সহজে তোলার জন্য ঐ সময় মানুষ কপিকল, আলম্ব প্রভৃতি যন্ত্রের সাহায্য নিতে শিখেছিল। ‘প্যাপিরাস’ জাতীয় নলখাগড়া থেকে মিসরের মানুষ প্রথম লেখার উপযোগী কাগজ তৈরি করল। ইরাক অঞ্চলের লোকেরা প্রথম চাকাযুক্ত গাড়ি বানিয়ে পরিবহন ব্যবস্থায় যুগান্তর আনলো। পানি তোলার উপযোগী বিশেষ ধরনের পাম্প এবং যন্ত্রচালিত ঘড়ি প্রথম আবিষ্কৃত হয় চীনদেশে।
গ্রিসের মানুষেরা প্রথম পৃথিবী ও মহাকাশের মানচিত্র বানায়। প্রাণিবিদ্যা, চিকিৎসাশাস্ত্র, স্থাপত্যবিদ্যা এবং জ্যামিতির ক্ষেত্রে গ্রিকবিজ্ঞানীদের দান কম ছিল না। অন্যদিকে বীজগণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান, শল্যচিকিৎসা, রসায়নশাস্ত্র, জীববিদ্যা প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রাচীন ভারতের ও আরব দেশের বিজ্ঞানীরা যেসব তত্ত্ব উদ্ভাবন করেছিলেন, তা মানুষের জীবনযাত্রাকে যথেষ্ট সহজ করে দেয় ।
বিজ্ঞানের জয়যাত্রা :
মানব কল্যাণে বিজ্ঞানের অবদান :
প্রাগৈতিহাসিক মানবের আগুন আবিষ্কারের দিন থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত মানুষের অতন্দ্র সাধনা বিজ্ঞানকে করেছে সমৃদ্ধ, সভ্যতাকে করেছে গতিশীল। বাষ্পীয় শক্তিকে সে করেছে বশীভূত, বিদ্যুৎকে করেছে করায়ত্ত, মুঠোয় পুরে নিয়েছে পারমাণবিক শক্তিকে। ডাঙায় ছুটছে বাস, ট্রেন, ট্যাক্সি, জলে ঢেউ-এর ঝুঁটি জাপটে ধরে জাহাজ ছুটে চলেছে, আকাশ তোলপাড় করে উড়ে চলেছে দ্রুতগামী উড়োজাহাজ, মহাশূন্যে পাড়ি দিচ্ছে রকেট, স্পুটনিক, মহাকাশযান।
অন্যদিকে বিজ্ঞান মৃত্যুর গ্রাস থেকে জীবনকে বাঁচিয়ে তুলতেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দৈনন্দিন জীবনে মানুষ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারকে পূর্ণাঙ্গরূপে কাজে লাগিয়েছে ইউরোপে শিল্পবিপ্লব ঘটে যাবার পর থেকে, উনিশ শতকে। ঐ সময়ই মানুষ বাষ্পের শক্তিকে নানা কাজে ব্যবহার করতে শিখে। তারপর আমরা ক্রমে ক্রমে বিদ্যুৎশক্তিকে কাজে লাগাতে শিখলাম।
বিশ শতকে আমরা জ্বালানি কয়লা ছাড়াও পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস এমনকি পারমাণবিক শক্তিকে মানুষের কল্যাণের কাজে লাগাতে পেরেছি। বাষ্পশক্তি, প্রাকৃতিক গ্যাসের শক্তি, সর্বোপরি বিদ্যুৎশক্তির ব্যাপক প্রচলন ঘটেছে নাগরিক জীবন থেকে গৃহস্থের ঘরে ঘরে। তাই আধুনিক কালে তার সাহায্য ছাড়া আমাদের এক মিনিটও চলে না । আর ঐ মিনিটের হিসেব করার জন্য প্রয়োজন হয় ছোট বড় ঘড়ির। তার কোনটা আবার ইলেকট্রনিক ।
বিজ্ঞানের ধ্বংসাত্মক ক্রিয়া :
বর্তমান শতাব্দীতে সংঘটিত দুটি মহাযুদ্ধে বিজ্ঞানের শক্তির ভয়াবহ ধ্বংসলীলা মানুষের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। কামান, বন্দুক, এটম বোমা, হাইড্রোজেন বোমা, পরমাণু বোমা, ডিনামাইট, বোমারু বিমান, ট্যাঙ্ক, সাবমেরিন ইত্যাদি আবিষ্কারের ফলে বিজ্ঞান আশীর্বাদ না হয়ে অভিশাপে পরিণত হয়েছে।
বিজ্ঞানের ধংসাত্মক শক্তির ক্রমবর্ধমান প্রবণতা লক্ষ করে আইনস্টাইন আক্ষেপ করে বলেছেন, “পৃথিবী এক অনিবার্য ধ্বংসের মুখে এগিয়ে চলছে।” বর্তমানে শক্তিধর দেশগুলো জীবাণু ভিত্তিক আণবিক অস্ত্র তৈরি করছে এবং তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে এসব অস্ত্র অবশ্যই ব্যবহৃত হবে এবং পৃথিবীর ধ্বংস তখন অনিবার্য। গ্রিন হাউজ অ্যাফেক্টের কারণে বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর নষ্ট হচ্ছে। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি পৃথিবীতে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছে।
এর ফলে নানা ধরনের জটিল রোগ দেখা দিচ্ছে। বাস, ট্রাক প্রভৃতি যানবাহনের কালো ধোঁয়া পরিবেশকে বিপর্যন্ত করছে। বিভিন্ন কল কারখানার বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তা নদীনালা, সমুদ্রে ফেলা হচ্ছে। জমিতে ব্যবহৃত কীটনাশক পানিতে মিশে পানিকে দূষিত করছে। ফলে মানুষের জীবনযাপন ক্রমেই বিপদজনক হয়ে পড়ছে।
বিজ্ঞানের অভিশাপ :
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিজ্ঞান কখনো কখনো মানুষের জন্য অভিশাপ বয়ে আনে। যন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল হতে গিয়ে মানুষ ক্রমশই কর্মবিমুখ হয়ে যাচ্ছে। সবচেয়ে আশঙ্কার কথা হলো বিজ্ঞানকে এখন ব্যবহার করা হচ্ছে সভ্যতার ধ্বংস ও অন্য য় যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে।
তৈরি হচ্ছে পৃথিবীকে ধ্বংস করার মতো মারাত্মক অ্যাটম বোমা, হাইড্রোজেন বোমা, জঙ্গী বিমান ও ধ্বংসাত্মক মারণাস্ত্র। জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকির ধ্বংসলীলা আধুনিক বিজ্ঞানেরই অভিশাপ। তবে বিজ্ঞানের এ অকল্যাণকর দিকটি মানুষের অজ্ঞানতা ও দাম্ভিকতার ফলাফল মাত্র ।
উপসংহার :
বিজ্ঞান ভালো মন্দ ব্যবহারের তারতম্যের মধ্য দিয়েই প্রতিষ্ঠা করেছে শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতি। বিজ্ঞান ছাড়া বর্তমান জগতে নানাবিধ প্রতিকূল অবস্থায় চলাই মুশকিল হতো। বিজ্ঞানের সঠিক ব্যবহার আমাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্ট
দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা- ১৫ পয়েন্ট|Class -6, 7, 8 ,9 ,10|PDF
রচনা বিজয় আমার অহংকার ৬০০ শব্দ
Stay forward thanks