(toc) Table Of Contens
উপস্থাপনা :
মানুষ স্বভাবতই কৌতূহল প্ররণ । অজানাকে জানার, অদেখাকে দেখার আকাঙ্ক্ষা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি । আর মানুষের সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করছে সংবাদপত্র । বিশ্বের যাবতীয় সংবাদ আর তথ্যের বাহন হিসেবে প্রতিদিন সকাল বেলায় আমাদের ঘরের দুয়ারে এসে হাজির হয় সংবাদপত্র ।
সংবাদপত্র কী :
মানবজীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত দৈনন্দিন ঘটনা প্রবাহের বিচিত্র তথ্য সমৃদ্ধ হয়ে যেসব প্রকাশনা রূপ লাভ করে সেগুলোকে সংবাদপত্র বলে। এক কথায় বলা যায়, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন রকমের সংবাদ বহন করে আনে যে পত্র বা কাগজ, তাকেই আমরা সংবাদপত্র বলে থাকি। মূলত মানুষের মনের অদম্য কৌতূহল ও অজানাকে জানার আগ্রহ থেকে এর সৃষ্টি। মানবজীবনের চাহিদা, প্রয়োজন, আর কালের আবর্তনে বিভিন্ন রূপ বৈচিত্র্যের জন্য সংবাদপত্রের ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটেছে।
সংবাদপত্রের উৎপত্তি ও ইতিহাস :
সংবাদপত্র কখন কোন দেশে প্রথম প্রচলিত হয়েছিল তা সঠিকভাবে বলা কঠিন । তবে চীন দেশেই প্রথম সংবাদপত্রের আবির্ভাব ঘটে বলে জানা যায়। ইউরোপীয় দেশসমূহের মধ্যে সংবাদপত্র প্রথম প্রকাশিত হয় ইতালিতে । জনশ্রুতি আছে ইউরোপের ভেনিস শহরে সর্বপ্রথম সংবাদপত্র মুদ্রিত হয়েছিল । ইংল্যান্ডে প্রথম সংবাদপত্র প্রকাশিত হয় রানি প্রথম এলিজাবেথের রাজত্বকালে । পাকভারতে মোগল রাজকর্মচারীদের মধ্যে এক প্রকার হস্তলিখিত সংবাদপত্র বিলি হতো এবং তা রাজধানী দিল্লি থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত হতো।
তবে এদেশে সংবাদপত্রের প্রচার পাশ্চাত্য প্রভাবের ফল বাংলাদেশ তথা ভারতবর্ষের প্রথম মুদ্রিত সংবাদপত্র 'বেঙ্গল গেজেট' । এটি ইংরেজি সংবাদপত্র । বাংলা ভাষায় প্রথম সংবাদপত্র মাসিক ‘দিকদর্শন' ও সাপ্তাহিক 'সমাচার দর্পণ' খ্রিষ্টান মিশনারিগণ কর্তৃক শ্রীরামপুর মিশন থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয় বাংলা ভাষার প্রথম দৈনিক পত্রিকা কবি ঈশ্বরগুপ্ত সম্পাদিত 'সংবাদ প্রভাকর' । বর্তমান বিশ্বে ছাপাখানার উৎকর্ষের ফলে সংবাদপত্রের ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটেছে।
সংবাদপত্রের প্রকারভেদ :
মুদ্রণযন্ত্রের উন্নতির ফলে বর্তমানে সংবাদপত্রের সংখ্যা অগণিত। পৃথিবীর সভ্য দেশগুলোতে দৈ নিক অর্ধ-সাপ্তাহিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক, ত্রৈমাসিক, অর্ধবার্ষিক, বার্ষিক বিভিন্ন ধরনের সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়। সাপ্তাহিক, মাসিক ও বার্ষিক সংবাদপত্রে সাধারণত ব্যবসা-বাণিজ্য, সাহিত্য, শিল্পকলা ইত্যাদি যাবতীয় প্রয়োজনীয় বিষয়াবলি বিশেষভাবে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন : রচনা : শৃঙ্খলাবোধ / নিয়মানুবর্তিতা ( ২০ পয়েন্ট )
বাংলাদেশের মানুষের কাছে সংবাদপত্র :
সংবাদপত্র আধুনিক সভ্যতার একটি বিশেষ অঙ্গ । আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশেও সংবাদপত্রের ছড়াছড়ি এবং পাঠকেরও অভাব নেই । মানুষ ঘুম থেকে উঠেই হাতের কাছে সংবাদপত্র পেতে চায় । আর সংবাদপত্রের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং জনপ্রিয়তার মূলে রয়েছে মুদ্রণ যন্ত্রের প্রচলন । মুদ্রণ যন্ত্র প্রবর্তনের ফলে আমাদের মতো একটি উন্নয়নশীল ও ক্ষুদ্র দেশেও অগণিত পত্র-পত্রিকা প্রকাশিত হয় এবং সমগ্র বিশ্বের খবরাখবর প্রত্যহ আমাদের হাতের মুঠোয় এনে দেয় ।
বাংলাদেশের সংবাদপত্র :
বাংলাদেশের দৈনিক সংবাদপত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দৈনিক ইত্তেফাক, আমার দেশ, ইনকিলাব, যুগান্তর, মানবজমিন, মাতৃভূমি, জনকণ্ঠ, ভোরের কাগজ, আজকের কাগজ, নয়া দিগন্ত, বাংলাবাজার পত্রিকা, সংগ্রাম, সংবাদ, আলআমিন, আলমুজাদ্দেদ, লালসবুজ, জনতা, প্রথম আলো, প্রাইম প্রভৃতি। ইংরেজী দৈনিকের মধ্যে রয়েছে, The Daily Star, Observer, New Nation, Morning Sun, Independent, Times, Financial Express ইত্যাদি।
সংবাদ সংগ্রহের উৎস :
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংবাদ সংগ্রহ করার জন্য প্রত্যেক সংবাদপত্রের রিপোর্টার বা প্রতিবেদক থাকে তারা প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাপ্রসূত সংবাদ সংগ্রহ করে । তাছাড়া সংবাদ সংগ্রহের জন্য রয়েছে সংবাদ সংগ্রহকারী বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা । এ সংস্থায় নিয়োজিত সাংবাদিকরা নির্দিষ্ট অঞ্চলের সংবাদ সেই সংস্থাকে জানালে টেলিপ্রিন্টার যন্ত্রের সাহায্যে পৃথিবীর সর্বত্র তা প্রচারিত হয়ে যায় । বিভিন্ন স্থানের ঘটনা ও ছবি রেডিও-ফটোগ্রাফি ব্যবস্থার মাধ্যমে হাজার হাজার মাইল দূরে পাঠানো যায় ।
সংবাদ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান :
সংবাদ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সংবাদদাতা নিযুক্ত করেন । সংবাদদাতাগণ তাদের নিজস্ব অঞ্চলের সংবাদ স্বীয় প্রতিষ্ঠানকে জানালে তারা টেলিপ্রিন্টার যন্ত্রের সাহায্যে তা সারা বিশ্বে প্রচার করেন। রয়টার পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা পরিচিত সংবাদ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান । পৃথিবীর সর্বত্র এই প্রতিষ্ঠানটির শাখা রয়েছে। বাংলাদেশের নিজস্ব সংবাদ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাসস । এনা, পিটিআই, ইউপিপি প্রভৃতিও সংবাদ সরবরাহকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান ।
আরও পড়ুন : চরিত্র - বাংলা প্রবন্ধ রচনা ( ২০ পয়েন্ট )
জনমত গঠনে সংবাদপত্র :
সংবাদপত্র পৃথিবীর মানুষের কাছে পৌঁছে দেয় দেশের সব সংবাদ, দূর করে মানুষের উৎকণ্ঠা ও ব্যাকুলতা, সংবাদ-তৃষ্ণা । যখন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মানব-ভাগ্যে দুর্দিন নেমে আসে তখন সংবাদপত্রই সেই দুঃসংবাদ গণমানুষের দুয়ারে পৌঁছে দিয়ে ত্রাণকার্যকে ত্বরান্বিত করে । সারা বিশ্বের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, বিজ্ঞান, সাহিত্য, সংস্কৃতি, বাণিজ্য, খেলাধুলা, আমোদ-প্রমোদ সকল ক্ষেত্রেই এর অবাধ বিচরণ ।
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সংবাদপত্রের ভূমিকা :
সংবাদপত্র জনগণের পবিত্র গণতান্ত্রিক অধিকার সংরক্ষণে সর্বদা দায়িত্বশীল অভিভাবকের ভূমিকা পালন করে । সংবাদপত্র গণদেবতার বিচারশালা । সর্বদা ন্যায় ও সত্যের মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার থাকে । গণমানুষের স্বার্থে যদি ব্যাঘাত ঘটে তখন সংবাদপত্র নির্ভীক কণ্ঠে সোচ্চার হয়ে ওঠে ।
সংবাদপত্রের স্বাধীনতা :
একটি দেশ কতখানি গণতান্ত্রিক এবং স্বচ্ছ জবাবদিহিতামূলক প্রশাসন দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে তা সেই দেশের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা থেকেই বোঝা যায় । সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতাই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা। দেশের সংবাদপত্রগুলো বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ছাপানোর জন্য সংবাদ সরবরাহ এবং সংবাদ ছাপানোর স্বাধীনতা দিতে হবে । পৃথিবীর স্বৈরাচারী শাসকরা বারবার সংবাদপত্রের ওপর কালো থাবা বিস্তার করে স্বাধীন মত প্রকাশকে বাধাগ্রস্ত করেছে। এভাবে সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোতেও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করা হয় ।
শিক্ষা বিস্তারে সংবাদপত্র :
সংবাদপত্রের মূল উদ্দেশ্য লক্ষ্য হলো মানুষকে শিক্ষিত করে তোলা, তথ্য প্রকাশ করা ও বিশেষকরে জ্ঞান লাভে প্রণোদিত করা। মানুষ সুশিক্ষিত হলে, তথ্য সম্পর্কে অভিজ্ঞ হলে তার মনের জড়তার মুক্তি ঘটে। তখন প্রখর সত্যের আলোকে কোনটি সত্য এবং কোনটি অসত্য তা সে চিনতে শেখে। উনিশ শতকের বাংলায় যে নবজাগরণের উদ্বোধন ঘটেছিল, তাতে বিরাট ভূমিকা ছিল সংবাদপত্রের।
সংবাদপত্র পাঠ করেই মানুষ জানতে পেরেছিল, বুঝতে পেরেছিল, কেন দেশে নারীশিক্ষার প্রসার ঘটা উচিত, বাল্যবিবাহ সমাজে ও জীবনে কতখানি ক্ষতিকর, বিধবা বিবাহ কতখানি শাস্ত্রসম্মত, অন্ধ ধর্মচেতনা জ্ঞান ও শিক্ষার প্রসারকে কতখানি আবদ্ধ করে রাখে। বর্তমানে আমাদের সংবাদপত্রগুলোতে শিক্ষা বিভাগ চালু হয়েছে। এতে কিছুটা হলেও শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছে এবং শিক্ষার প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়ছে।
আরও পড়ুন : রচনা : বৃক্ষরোপণ ( ২০ পয়েন্ট )
সংবাদপত্রের অন্ধকার দিক :
সংকীর্ণ স্বার্থে পরিচালিত যেকোনো সংবাদপত্র ও সাংবাদিকই জাতির জন্য, সমাজের জন্য, রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। সবচেয়ে নৈরাশ্যজনক ব্যাপার হলো- দেশের এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিক বিশেষ মহলের নেক নজরের আশায় অনেক সময়ই পত্রপত্রিকায় ভুল তথ্য দিচ্ছেন।
এসব সংবাদপত্রের কুৎসাপূর্ণ বানোয়াট কাহিনি, বিকৃত মতবাদ, মিথ্যা ভাষণ, ভুল তত্ত্ব ও তথ্য পরিবেশন করে এরা জনগণকে উত্তেজিত করে দলীয় ও ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জন করে যা জাতির জীবনে সৃষ্টি করে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। গণতন্ত্রকে সফল করার জন্য এ অবস্থা মোটেই কাম্য নয়। সংবাদপত্রকে জাতি গঠনের কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হলে এর প্রকাশক, সাংবাদিক, কলামিস্ট সবাইকে অবশ্যই নিরপেক্ষ ও সত্যনিষ্ঠ হতে হবে।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় পরিপূরক ভূমিকা :
বর্তমানে আমাদের দেশে পাঠ্যক্রমভিত্তিক এবং পরীক্ষানির্ভর সার্টিফিকেটমুখী শিক্ষায় শিক্ষার্থীর জ্ঞানের ক্ষেত্র সীমিত হয়ে পড়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই শিক্ষা পরিণত হয়েছে নোট ও গাইডনির্ভর মুখস্থ বিদ্যায়। অন্যদিকে সংবাদপত্র এখন জ্ঞান-বিজ্ঞানের সর্বক্ষেত্রকেই তার আওতায় এনেছে। ফলে তাতে কেবল দৈনন্দিন জগতের খবরাখবর থাকে না, রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, সংস্কৃতি, শিল্প-বাণিজ্য, খেলাধুলা, বিনোদন, স্বাস্থ্য, চাকরি, জীবিকা ইত্যাদি সম্পর্কেও নানা তথ্য থাকে।
নিয়মিত সংবাদপত্র পাঠের মাধ্যমে বহুমুখী জ্ঞান অর্জনের সুযোগ হয়। এতে জনগণের জ্ঞানের ক্ষেত্র যেমন সম্প্রসারিত হয় তেমনি তেমনি ভাষাজ্ঞানও বাড়ে। তাছাড়া দেশ ও জাতির সমস্যা, সম্ভাবনা সম্পর্কে তাঁরা অবগত হন। তাঁদের রাজনৈতিক, সামাজিক সচেতনতা জাগ্রত হয়। আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও সম্প্রীতিবোধের প্রসার ঘটে। এভাবে সংবাদপত্র জনগণের সর্বতোমুখী শিক্ষায় অবদান রাখে।
সংবাদপত্র পাঠের প্রয়োজনীয়তা :
সংবাদপত্র পাঠ না করে কারো জ্ঞান ও শিক্ষা পূর্ণ বিকশিত হতে পারে না। পুস্তকের শিক্ষা সীমাবদ্ধ ও সংকীর্ণ, কিন্তু সংবাদপত্রের শিক্ষা অপিরসীম ও অভিনব। সংবাদপত্র পাঠে মানুষের পার্থিব জ্ঞানের পথ প্রসারিত হয়। আগে মানুষ পৃথিবী ভ্রমণ করে যে জ্ঞান অর্জন করতো, বর্তমানে আমরা ঘরে বসে তা অর্জন করতে পারি।
বর্তমানের সংবাদপত্র কেবল সংবাদপত্রই নয়, বর্তমানে এতে সংবাদ ছাড়া নানা প্রকার সুচিন্তিত প্রবন্ধ, গল্প, নাটক, চিত্র, নানারকম গবেষণামূলক বিষয়, বিজ্ঞান ও ক্রীড়াবিষয়ক বিবরণ, বাজার দর ও শেয়ার মার্কেটের খবর প্রকাশিত হয়। সুতরাং এটা শিক্ষিত, অর্ধ-শিক্ষিত, আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সকল শ্রেণির মানুষের মধ্যে জ্ঞান বিতরণ করে।
সংবাদপত্রের প্রভাব :
জাতীয় জীবনে সংবাদপত্রের প্রভাব অপরিসীম। বর্তমান যুগে প্রত্যেক লোকের অধিকার আছে সংবাদপত্রের মাধ্যমে মতামত প্রকাশ করার। সংবাদপত্র জাতিকে জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ করে এবং জনসাধারণের সাংস্কৃতিক মন জাগ্রত করে। এটা জনমত গঠনে একান্ত সহায়ক। সমাজসেবা এবং সমাজসংস্কারেও এর অবদান অতুলনীয়।
এটি সরকারের সাথে জনগণের সংযোগ সাধন করে, কিন্তু মাঝে মাঝে সংবাদপত্রে ক্ষতিকর বিষয়ও পরিলক্ষিত হয়। সংবাদপত্রে মালিক পক্ষের অভিমত শুভঅশুভ প্রভাব বিস্তার করে। প্রায়ই দেখা যায়, মালিকপক্ষ সাংবাদিক ও সংবাদপত্রকে স্বসমর্থিত দলের স্বার্থসিদ্ধির মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। এতে জনসাধারণ বিভ্রান্ত, বিপথগামী হয়। এরূপ সাংবাদিকতা দেশ ও জাতির পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। তাই এটি অবশ্যই বর্জনীয় ।
আরও পড়ুন : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি - রচনা ( ২০ পয়েন্ট )
সংবাদপত্রের বর্তমান রূপ:
আগে সংবাদপত্র বলতে শুধু বোঝাত সংবাদ পরিবেশনের কাগজ মাত্র। সেখানে অন্য কিছু থাকত না। আজকাল একটি দৈনিক পত্রিকায় শুধু সংবাদ থাকে না, থাকে সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিক্ষা, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, ধর্ম, ফ্যাশন, কৌতুক, কার্টুন ও ক্রীড়াবিভাগ। তা ছাড়া শিশুদের জন্য শিশু বিভাগ, মহিলাদের জন্য রয়েছে মহিলা বিভাগ। সংবাদপত্র এখন রাজনৈতিক মত প্রচারের বিশেষ শক্তিশালী যন্ত্র বিশেষ ।
সংবাদপত্রের উপকারিতা :
সংবাদপত্রের উপকারিতা অনেক। সংবাদপত্রের মাধ্যমে ঘরে বসে সমস্ত পৃথিবীর খবর জানতে পারে। নিমিষে মানুষের মনের খোরাক জুগিয়ে দেয় । পৃথিবীর বিখ্যাত আবিষ্কারের খবরগুলো মানুষকে জানিয়ে দেয় । ব্যবসায়িদের নানা পণ্যের খবর খদ্দেরদের জানিয়ে দেয়।
সংবাদপত্রের অপকারিতা :
সংবাদপত্র শুধুমাত্র উপকারই করে না অপকারও করতে পারে। অনেক সময় সংবাদপত্র কোনো দলীয় স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে মিথ্যা খবর প্রচার করে জনগণের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে। মিথ্যা সংবাদ, মিথ্যা মতবাদ প্রচার করে দেশে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দেয়। অনেক সময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধাতেও দ্বিধাবোধ করে না, ফলে অনেক রক্তারক্তি হয়ে যায় ।
উপসংহার :
সংবাদপত্র জাতি, সমাজ ও রাষ্ট্রকে সঠিক নির্দেশনা দেয়। মানুষ পৃথিবী সম্বন্ধে চলমান বাস্তব জ্ঞান অর্জন করতে পারে। তাই আমাদের উচিত সংবাদপত্রকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা।