উপস্থাপনা:
Honesty is the best policy, সততা মানব চরিত্রের একটি মহৎ গুণ। এটা অত্যন্ত মূল্যবান বিষয়। এ গুণ দ্বারাই মনুষ্যত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। সততা মানবজীবনে সফলতা ও আনন্দ বয়ে আনে। প্রত্যেক মানুষ সৎ ও সত্যবাদীকে সম্মান করে।
সত্যবাদিতার সংজ্ঞা :
কোনো কিছু অকপটে প্রকাশের নামই সত্যবাদিতা। সৎ থাকার গুণকে সত্যবাদিতা বলে। সত্যকে অনুসরণ করে জীবন অতিবাহিত করাকেই বলে সত্যবাদিতা। যা কিছু সত্য, যা কিছু সুন্দর তার সঙ্গে অবস্থান করার গুণই সত্যবাদিতা। অন্যভাবে বলা যায়, যা কিছু অবৈধ যা কিছু খারাপ ও অসত্য তা থেকে দূরে থাকার নামই সত্যবাদিতা।
আরও পড়ুন : চরিত্র – বাংলা প্রবন্ধ রচনা ( ২০ পয়েন্ট )
মানব জীবনে সত্যবাদিতা :
মানব জীবনে সত্যবাদিতা এক অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় আদর্শ। সমাজে রয়েছে নানা বাধা-বিপত্তি, লোভ-লালসা, প্রলোভন ও বিপথগামী হবার পথ। কিন্তু সত্যবাদিতা যাদের নিত্যসঙ্গী তাদের জীবনে এসব কলুষতা স্পর্শ করতে পারে না। মানবজীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে সত্যবাদিতা অপরিহার্য।
উত্তম মানুষ হতে হলে সত্যবাদিতার মাধ্যমে জীবনকে অতিবাহিত করতে হবে। মানবজীবনে সত্য হতে বিচ্যুত হলে মনুষ্যত্বের অমর্যাদা ঘটে। সততা বা সত্যবাদিতার কারণে সমাজে মানুষ প্রশংসিত হয়। সত্যবাদী ছিলেন বলেই আরববাসী হযরত মুহম্মদ (স) কে ‘আল আমীন’ বলে সম্বোধন করতেন। পৃথিবীর মহামানবগণ আজীবন সত্যবাদিতার পথ অনুসরণ করে জীবনকে গৌরাবান্বিত করে গেছেন।
সত্যবাদিতার গুরুত্ব :
সত্যবাদিতা এমন একটি গুণ যা মানব জীবনে এনে দেয় কলুষমুক্ত ও চিরন্তন সাফল্য। পৃথিবীর মহামানবদের জীবনী থেকে আমরা দেখতে পাই তারা সত্যবাদিতাকে তাদের জীবনের ব্রত করেছিলেন। সত্যকে অনুসরণ করতে গিয়ে তাঁরা নানা বাধা-বিপত্তি পেরিয়েছেন। শত দুঃখ-কষ্টের মধ্যে জীবন অতিবাহিত করেছেন। কিন্তু সততার মূল্যও তাঁরা পেয়েছেন। সত্যের সাধক মহাপুরুষগণ আজও মানুষের কাছে স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন।
মানবজীবনে অনেকে অসততার আশ্রয় নিয়ে জীবনে বড় হতে চায়। কিন্তু সত্য একদিন প্রকাশিত হয় এবং অসৎ ব্যক্তির জীবনকে কালিমায় পূর্ণ করে দেয়। সত্য থেকে বিচ্যুত হয়ে সাময়িক সাফল্য এলেও অচিরেই মানুষ তাকে অসত্যের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করে। অসত্য অবলম্বন করে কেউ কখনো জীবনে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে এমন দৃষ্টান্ত নেই। সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী। সত্যবাদিতা জীবনে আনে মর্যাদাপূর্ণ সাফল্য ও বিজয়ের মুকুট আর মিথ্যার আশ্রয়ে মানুষ ধ্বংসের পথে পরিচালিত হয়। তাই মানব জীবনে সত্যবাদিতার গুরুত্ব অপরিসীম।
আরও পড়ুন : রচনা : শৃঙ্খলাবোধ / নিয়মানুবর্তিতা ( ২০ পয়েন্ট )
সত্যবাদী হওয়ার উপায় :
জীবনে সত্যবাদিতা অর্জনের জন্য আমাদের সর্বদা অসততার পরিণাম সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। নিয়মিত সত্যবাদিতার অনুশীলন করতে হবে। যা কিছু সত্য, যা কিছু ঘটে তা বিকৃত না করে অকপটে তা প্রকাশ করার চর্চা করতে হবে। জীবনে চলার পথে সর্বদাই সত্যবাদিতাকে আঁকড়ে থাকতে হবে।
সত্য বলা ও সত্যের সঙ্গে চলার অনুশীলন শৈশবে পরিবার থেকে শুরু করার প্রয়োজন। পিতা-মাতা এবং পরিবারের অন্যরা শিশুদের সততা শিক্ষা দিলে সারাজীবনের জন্য তা বিকশিত হতে থাকবে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে সত্যবাদিতার আদর্শ অনুসরণ করতে হবে। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে সত্যকে উৎসাহিত করতে হবে। সততার জন্য পুরস্কার ও অসততার জন্য শাস্তির বিধান থাকতে হবে।
সত্যের শক্তি :
সত্যের শক্তি অসীম। সত্যবাদীরা পরম ধৈর্যসহকারে সত্যকে বিশ্বাস ও অনুসরণ করেন এবং পরিণামে জয়লাভ করেন। সত্যের পথই পুণ্যের পথ যা জীবনকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে। সত্যভাষণ, সত্যবচনই সত্যের সাধনায় সফলতা লাভের চাবিকাঠি। সত্যের অনুসরণে জীবন সংসারের সমস্ত পাপ, লোভ, প্রতারণা ও মিথ্যার পঙ্কিলতাকে স্পর্শ না করে নিষ্কলঙ্ক পবিত্র মাধুর্যে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
জীবন ও জগতে যা কিছু সত্য তাকে বিশ্বাস করা এবং সে বিশ্বাসের কথা অকুতোভয়ে নির্ভীকচিত্তে প্রকাশ করাই সত্যবাদিতার লক্ষণ। সত্যকে অবলম্বন করার কারণে মানুষ আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয় ও আত্মশক্তি বৃদ্ধি করে। সত্য কথা বলতে গিয়ে আমাদের জিভও যেন ধারালো খড়গের মতোই ঝলসে ওঠে। ফলে মিথ্যা অন্ধকারের পর্দা ছিঁড়ে গিয়ে ভোরের আলোর মতো ফুটে ওঠে সত্যের আলো ।
আরও পড়ুন : কর্মমুখী শিক্ষা/ বৃত্তিমূলক শিক্ষা- রচনা (২০ পয়েন্ট)
চরিত্র গঠনে সত্যবাদিতা :
সত্য যেন বেহেশতের মহিমা নিয়ে মানব জীবনে উদ্ভাসিত। শুধু ধর্মীয় বা দার্শনিক ক্ষেত্রেই নয়, মানব চরিত্র গঠনেও সত্যবাদিতা অভাবনীয় ভূমিকা পালন করে। মানবজীবনের মুকুটস্বরূপ এ চরিত্রকে উন্নত ও মহান করতে হলে প্রত্যেককে অবশ্যই সত্যবাদী হতে হবে। সত্যবাদিতার নির্মল আনন্দ চরিত্রকে পরিপূর্ণরূপে বিকশিত করতে সহায়তা করে।
সচ্চরিত্র মানুষ মাত্রই সত্যভাষণের অধিকারী। আর জীবনপথকে প্রশস্ত করতে প্রত্যেক মানুষেরই এ গুণটি থাকা আবশ্যক। এ গুণটির ফলে সে সকল প্রকার অন্যায় অসত্যের মধ্যে প্রতিবাদী হতে শেখে। প্রতিবাদের এ সূত্র ধরে আমাদের ব্যক্তি ও সমাজ জীবন নির্মল ও সুন্দর হয়ে ওঠে।
সত্যবাদিতার দৃষ্টান্ত :
অবিচল বিশ্বাস ও নিষ্ঠাসহকারে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য জগতে কত মহামনীষী আজীবন সাধনা করে গেছেন। হযরত আবদুল কাদির জিলানী (র) বাগদাদে গমনকালে ডাকাত কর্তৃক আক্রান্ত হয়ে প্রাণের ভয় থাকা সত্ত্বেও অকপটে স্বীকার করেছিলেন তাঁর গোপন পকেটে চল্লিশটি মুদ্রার কথা। মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) সত্যবাদিতার কারণেই তাঁর চরম শত্রুদের নিকটও আল-আমীন বা ‘বিশ্বাসী’ বলে পরিচিত ছিলেন। মহামানবদের জীবনে সত্যবাদিতা ও সত্যাশ্রয়ী আদর্শের এমন অনেক দৃষ্টান্ত আমরা জানি যা জীবনের আদর্শ হিসেবে সকলেরই গ্রহণ করা উচিত।
সততার মানদণ্ড :
সৎব্যক্তি গরিব হতে পারে, কিন্তু সে সুখী। স্কুল, কলেজ, অফিস-আদালত, ব্যবসায়-বাণিজ্য তথা সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সততার মানদণ্ড অনেক ঊর্ধ্বে। যে-কোনো ব্যাপারে সৎব্যক্তির সাক্ষ্য মানুষ বিশ্বাস করে। Truthfulness is the essential quality of a man character.
সততা ও কিছু সমস্যা :
সততার প্রভাব :
সমাজে অসৎ ও মিথ্যার প্রাধান্য সর্বত্র দেখা গেলেও পরক্ষণেই সততা তার স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত হয়। এ প্রসঙ্গে একটি চমৎকার উদাহরণ উল্লেখ করা যায়, তা হলো- বাল্য বয়সে হযরত আবদুল কাদের জিলানি (র) একদিন বাগদাদ যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে তিনি ডাকাত দলের কবলে পড়েন ।
সততা অর্জনের পন্থা :
সততা একটি বাস্তব অনুশীলন বা চর্চা। আর সততা অবলম্বনের উত্তম পন্থাই হলো মিথ্যা পরিহার করে সত্য বলা এবং সৎকাজের বাস্তব অনুশীলন করা। আর এটি আল্লাহভীতি ছাড়া সম্ভব নয়। মৃত্যুপরবর্তী জীবনে অসততার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে আন্তরিক বিশ্বাস দৃঢ় হলেই কেবল মানব চরিত্রে সততার গুণ সৃষ্টি হতে পারে ।
মহৎ ব্যক্তিদের জীবনে সততা :
সততার সুফল :
অসততার কুফল :
সততার সামাজিক মূল্যবোধ :
প্রত্যেক সমাজেই সততার জয় জয়কার। তাই সততার সামাজিক মূল্য অপরিসীম। সততার মাধ্যমেই সমাজে শান্তি ও সুখ প্রতিষ্ঠিত হয় । শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রত্যেকের উচিত সততার পথ অনুসরণ করা। কেননা সততা সাধনালব্ধ ধন, এটা এমনিতে অর্জিত হয় না ।
Ami tomar sathe prem korte chai.. tumi ki raji?? Tahole call dio..01738653846