একজন বীরশ্রেষ্ঠ - রচনা ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণি

ভূমিকা : 

প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে ১৯৭১ সালে লড়াই করেছিলেন লাখো বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাঁদের মধ্যে সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ রণাঙ্গনে অকাতরে জীবন বিলিয়ে দেওয়ার জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন জাতির সেই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের একজন ।

জীবনবৃত্তান্ত :

বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ১৯৩৫ সালের জুন মাসে নোয়াখালী জেলার সাবেক বেগমগঞ্জ থানার বাঘচাপড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মো. আজহার পাটোয়ারী এবং মায়ের নাম মোছা. জোলেখা খাতুন। রুহুল আমিন ছিলেন পরিবারের বড় সন্তান। স্বভাবে খুব অমায়িক ও সুঠাম দেহের অধিকারী ছিলেন এই বীরশ্রেষ্ঠ। 

সমুদ্র ভালোবাসতেন বলে বেছে নিয়েছিলেন নৌবাহিনীর চাকরি। পিতাকে সহায়তা করার ইচ্ছা থেকে তরুণ বয়সেই ১৯৫৩ সালে তিনি তৎকালীন পাকিস্তান নৌবাহিনীতে যোগ দেন। পদ ছিল জুনিয়র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার।

আরও পড়ুন :- একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা বা বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ - রচনা

মুক্তিযুদ্ধে তাঁর আত্মত্যাগ : 

মুক্তিযুদ্ধের ডাক এলে ২ নম্বর সেক্টরের অধীনে যুদ্ধে অংশ নেন রুহুল আমিন। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর খুলনার রূপসা উপজেলার বাগমারা গ্রামে রূপসা নদীতে মুক্তিযোদ্ধাদের নৌজাহাজ বিএনএস পলাশে অবস্থান করছিলেন রুহুল আমিন। 

বোমারু বিমান আঘাত হানে পলাশ-এ। গুরুতর আহত অবস্থায়ও দৃঢ়তার সাথে যুদ্ধ চালিয়ে শেষ পর্যন্ত 'পলাশ' থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ রক্ষা করেন রুহুল আমিন।

মৃত্যু : 

রুহুল আমিন সাঁতরে নদী তীরে উঠে আসেন। কিন্তু ভাগ্য তাঁর অনুকূলে ছিল না। তীরে অপেক্ষমাণ রাজাকাররা নির্মমভাবে হত্যা করে তাঁকে। শহিদ হন তিনি। খুলনা শিপইয়ার্ডের কাছেই চিরনিদ্রায় শায়িত হন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ।

উপসংহার : 

বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন আমাদের অহংকার। মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগের জন্য দেশ তাঁকে মনে রাখবে চিরকাল ।

Post a Comment

0 Comments

Bottom Post Ad