জীববিজ্ঞান কাকে বলে? জীববিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা

সংজ্ঞা :- বিজ্ঞানের যে শাখা জীবের (উদ্ভিদ ও প্রাণী) আকৃতি-প্রকৃতি, জীবন বৃত্তান্ত প্রভৃতি বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা, পর্যালোচনা ও গবেষণা করে, তাকে জীববিজ্ঞান (Biology) বলে ।

জীববিজ্ঞান বা Biology শব্দের উৎপত্তি :- 

জীববিজ্ঞান বা Biology শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে দুটি গ্রীক শব্দ থেকে। গ্রীক শব্দ দুটি হচ্ছে- Bios এবং logos. Bios অর্থ life বা জীবন এবং logos অর্থ Knowledge বা জ্ঞান । সুতরাং Biology শব্দের বাংলারূপ হল জীববিজ্ঞান বা জীবন সম্পর্কিত জ্ঞান ।

জীববিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা :- 

মানব জীবনের মৌলিক চাহিদা হল খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, ওষুধ-পথ্য ইত্যাদি যা জীব জগৎ হতেই পাওয়া যায়। নিম্নে জীববিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তার সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা গেল :

১. খাদ্য উৎপাদন : জীববিজ্ঞানের দ্বারা অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে আমরা কৃষিকাজ, পশুপালন, মৎস চাষ, বনভূমি সংরক্ষণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি সাধন করে এমনটি ধান, গম, পাট প্রভৃতি শস্যের অধিক ফলনশীল বীজ আবিষ্কার করে উৎপাদন বাড়াতে সক্ষম হয়েছি।

২. ওষুধ বা রোগ প্রতিরোধ : জীববিজ্ঞানের লব্ধ জ্ঞান দ্বারা মানুষ রোগের কারণ এবং রোগ প্রতিরোধক্ষম ওষুধ তৈরি বা প্রস্তুত করতে সক্ষম হয়েছে।

৩. বস্ত্র : মানবজাতির অত্যাবশ্যকীয় উপাদানসমূহের মধ্যে বস্ত্র অন্যতম। জীববিজ্ঞানের জ্ঞান দ্বারা মানুষ বস্ত্রশিল্পের উন্নতি সাধন করতে সক্ষম হয়েছে।

৪. বাসস্থান : বাসস্থানের জন্য উদ্ভিদ বা বনজ সম্পদ বা কাঠ সংরক্ষণ করে বাসস্থান সমস্যা সমাধান করা হয় ।

৫. পরিবেশ জ্ঞান : পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ, বন্যা ও ভূমিক্ষয় রোধ, বন ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ইত্যাদি জীববিজ্ঞানলব্ধ জ্ঞান দ্বারাই সম্ভব।

৬. উন্নত ফসল ও জীব : উন্নত মানের ফসল উৎপাদন, হাঁস-মুরগি, পশু, মাছ এবং অন্যান্য জীবের প্রভূত উন্নতি কৃত্রিম প্রজননের দ্বারাই সম্ভব হচ্ছে।

৭. উদ্ভিদ ও প্রাণির সম্পর্ক : উদ্ভিদ ও প্রাণী কিভাবে পরস্পর নির্ভরশীল, কিভাবে একের অস্তিত্বে অন্যের উপস্থিতি নিয়ন্ত্রিত হয় এবং বৈচিত্র্যময় পৃথিবীর বিভিন্ন জীবের আকৃতি, প্রকৃতি, প্রাপ্তিস্থান ও তাদের দ্বারা কিভাবে আমাদের উপকার বা অপকার হয় ইত্যাদি জীববিজ্ঞান পাঠের দ্বারাই জানা সম্ভব।

৮. জীবন-মরণ সমস্যা : বহু উদ্ভিদ আছে যা মুমূর্ষু রোগীর জীবন দান করতে পারে। আবার অনেক উদ্ভিদ আছে যা অত্যন্ত বিষাক্ত যা সহজেই আমাদের জীবন হরণ করতে পারে। এই সম্বন্ধে জানতে হলে আমাদেরকে জীববিদজ্ঞান পাঠ করতে হবে ।

৯. খাদ্যের গুণাগুণ : আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্যের উপকারিতা, অপকারিতা এবং মান নির্ণয় ইত্যাদি জীববিজ্ঞান পাঠের দ্বারা জানা সম্ভব হচ্ছে।

১০. মহাকাশ গবেষণায় : মহাকাশ গবেষণায় ক্লোরেলা নামক শৈবাল ব্যবহৃত হয়ে থাকে যা জীববিজ্ঞান পাঠের জ্ঞান দ্বারাই সম্ভব হয়েছে।

Post a Comment

0 Comments

Bottom Post Ad