জীন কি?এর বৈশিষ্ট্য।বংশগতির বাহক হিসেবে ক্রোমোসোমের গুরুত্ব

ক্রোমোসোমস্থিত রাসায়নিক পদার্থ যা জীবনের বংশগত বৈশিষ্ট্যাবলির ধারক ও বাহক, তাকে জীন বলে ।

যেহেতু DNA অণুই মুখ্যত জীবের বংশগত বৈশিষ্ট্যাবলি পুরুষানুক্রমে এক জনু থেকে অপর জনুতে বহন করে তাই DNA অণুকেই জীন নামে অভিহিত করা হয় ।

জীনের ধর্ম বা বৈশিষ্ট্য :- 

জীনের প্রধান ধর্মগুলো বা বৈশিষ্ট্যগুলো হলো : 

১. জীন ক্রোমোসোমের অবিচ্ছিন্ন অংশ ।

২. জীন নিউক্লিক অ্যাসিড দ্বারা গঠিত। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটি DNA দ্বারা গঠিত। কয়েক প্রকার ভাইরাসের দেহে এটি RNA দ্বারা গঠিত ।

৩. আকৃতি ও সংযুক্তি অপরিবর্তিত রেখে জীনের আত্মোৎপাদনের ক্ষমতা আছে ৷

৪. জীনের পরিব্যপ্তির (mutation) ক্ষমতা আছে ।

৫. জীন বংশগত বৈশিষ্ট্যাবলির ধারক ও বাহক।

৬. একটি ক্রোমোসোমে অসংখ্য জীন থাকে এবং তারা রৈখিক বিন্যাসে (lipearly arranged) অবস্থান করে। 

৭. ক্রোমোসোম দেহে জীনের স্থান নির্দিষ্ট থাকে ।

৮. সাধারণ এক একটি বৈশিষ্ট্য একাধিক জীনের সম্মিলিত ক্রিয়ার ফল। যেমন - ড্রসোফিলা নামক পতঙ্গের চোখের রঙ কমপক্ষে ২০টি জীনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।

৯. কোন একটি বৈশিষ্ট্যকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যে জীনগুলো দায়ী তারা সব সময় একসঙ্গে থাকে না। যেমন- ড্রসোফিলার দেহবর্ণের নিয়ন্ত্রণকারী জীনগুলো একটি ক্রোমোজেসামে না থেকে বিভিন্ন ক্রোমোসোমে ছড়িয়ে অবস্থান করে।

বংশগতির বাহক হিসেবে ক্রোমোসোমের গুরুত্ব :- 

ক্রোমোসোম নিউক্লিয়াসের মধ্যে অবস্থিত লম্বা সূতার মতো বস্তু। এটি কোষের স্থায়ী অঙ্গ বলে একটি বিশেষ কোষ হতে অন্য কোষ সৃষ্টি হওয়ার সময় এদের স্পষ্ট দেখা যায়। ক্রোমোসোম জীন বা বংশগতি বস্তু বহন করে। অসংখ্য অতি সূক্ষ্ম জীবন বা বংশাণু নিয়ে ক্রোমোসোম তৈরি । 

জীন আমিষের তৈরি কাঠামো ও শারীরবৃত্তীয় কাজের মূল উপাদান। জীনের মাধ্যমে বাবা-মা থেকে জীবের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য যেমন : দেহের রং, আকার, আয়তন, লিঙ্গ ইত্যাদি সন্তান-সন্ততিতে পরিবাহিত হয়। মানুষের ক্রোমোসোমে অসংখ্য জীন কে নানাভাবে বিন্যস্ত থাকে বলেই যমজ ছাড়া কখনই কোন মানুষ চেহারা ও প্রকৃতিতে একরকম হয় না।

উপরোক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে বংশগতির বাহন হিসেবে ক্রোমোসোম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

Post a Comment

0 Comments

Bottom Post Ad