রচনা : বাংলাদেশের পাখি / পাখিদের কথা -(ক্লাস ৩, ৪, ৫)

রচনা - ১

সূচনা : 

বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি । রংবেরঙের পাখি এদেশের প্রকৃতিকে শোভাময় করে তুলেছে ।

পাখির প্রজাতি : 

বাংলাদেশে প্রায় ৬৫০ প্রজাতির পাখি দেখা যায়। এর মধ্যে প্রায় ৩০১ প্রজাতির পাখি দেশেই বসবাস করে। বাকিগুলো বিভিন্ন সময়ে আসা অতিথি পাখি

দোয়েল : 

সুদর্শন ও সুকণ্ঠী দোয়েল আমাদের জাতীয় পাখি। এর মিষ্টিমধুর গান আমাদের মন ভরিয়ে দেয়।

কোকিল : 

কোকিল দেখতে কালো। এর সুকণ্ঠ মানুষকে মোহিত করে। বসন্তকালে কোকিলের গান বাংলার প্রকৃতিকে মাতিয়ে তোলে । 

আরও পড়ুন :- ধান - বাংলা রচনা [ class 3, 4, 5 ]

কাক : 

পাখিদের মধ্যে কাক খুব চালাক। তার গলার স্বর কর্কশ। তবে কাক মৃত প্রাণী ও অন্যান্য নোংরা বস্তু খেয়ে পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখে।

কবুতর : 

অনেকেই শখ করে কবুতর পোষে। সাদা কবুতর শান্তির প্রতীক হিসেবে পরিচিত ।

ময়না : 

কালো রং ও হলদে ঠোঁটের ময়না সহজে পোষ মানে । এরা শেখালে মানুষের কথা সুন্দরভাবে অনুকরণ করতে পারে। 

বুলবুলি : 

বুলবুলি গানের পাখি। এদের শরীরের রং কালো ও খয়েরি মেশানো । 

আরও পড়ুন :- পাট - রচনা ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণি

চড়ুই ও শালিক : 

চড়ুই ও শালিক আমাদের খুব কাছের পাখি। চড়ুই ঘরের চাল, ভেন্টিলেটর ও কার্নিশে বাসা বাঁধে।

অন্যান্য পাখি : 

আমাদের দেশে আরও রয়েছে টিয়া, মাছরাঙা, টুনটুনি,বাবুই, মৌটুসী, ডাহুক, বক, পানকৌড়ি, বালিহাঁস ইত্যাদি হরেক রকমের পাখি। কোনোটি দেখতে সুন্দর, কোনোটি বাসা তৈরিতে অতি দক্ষ । চিল, বাজ ও শকুন শিকারি পাখি হিসেবে সুপরিচিত।

উপসংহার : 

পরিবেশের ভারসাম্যের জন্য পাখি খুব গুরুত্বপূর্ণ। পাখি পাকামাকড় খেয়ে, বীজ ছড়িয়ে ও ফুলের পরাগায়নে সহায়তা করে ফসলের ফলন বাড়ায়। পাখির কলকাকলি আমাদের মনে প্রশান্তি গানে । তাই পাখিকে আমাদের রক্ষা করতে হবে ।

রচনা - ২

ভূমিকা : 

বছরের সব সময়ই বাংলাদেশের সর্বত্র বিভিন্ন প্রকারের পাখি দেখা যায়। পাখির ডানায় ভর করে এখানে সন্ধ্যা নামে। আবার পাখির ডাকেই আমরা ঘুম থেকে জেগে ওঠি। কত না রাত জাগা পাখি মাঝে মাঝে ঘোষণা করে রাতের প্রহর। কবির ভাষায়—

“এ দেশ পাখির দেশ, কত পাখি আছে এইখানে

কত রূপ! কত রঙ! কত গান সে পাখিরা জানে।”

এ দেশের পাখি :

বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য পাখির মধ্যে রয়েছে কাক, কোকিল, শালিক, দোয়েল, ময়না, টিয়া, মাছরাঙা, চিল, বক, চড়ুই, টুনটুনি, ময়ূর, বাজ, ঘুঘু ইত্যাদি জানা-অজানা আরও কত জাতের পাখি। এছাড়া বুলবুলি, ময়না, বউ কথা কও, বলাকা এবং পাপিয়ারও বেশ নাম আছে। ময়ূর সুন্দর পাখি। আকাশে কালো মেঘ দেখলেই এরা রঙ-বেরঙের পেখম তুলে আনন্দে নাচতে শুরু করে ৷

গৃহপালিত পাখি :

গৃহপালিত পোষা পাখিদের মধ্যে হাঁস-মুরগি, কোয়েল ও কবুতর মানুষের সবচেয়ে বেশি প্রিয়। এছাড়া চড়ুই পোষা না হলেও অতিথির মতো আমাদের ঘরেই বাস করে। সে কখনও জানালার ফাঁক দিয়ে ফুড়ুৎ করে উড়ে যায়, কখনও টেবিলের ওপর এসে বসে, আবার কখনও লুটোপুটি খায় একেবারে বিছানার ওপর। সুতরাং বলা যায় চড়ুই আমাদের ঘরেরই বাসিন্দা।

শিকারী পাখি :

চিল, ঈগল ও বাজ শিকারী পাখি। এরা সুযোগ পেলেই হাঁস-মুরগির ছোট বাচ্চা ছোঁ মেরে নিয়ে যায়। তাই এদের কেউ পছন্দ করে না। শকুন বড় আকারের এক কুৎসিত পাখি। এরা প্রাণীর মৃতদেহ খেয়ে বাঁচে।

আরও পড়ুন :- বাংলাদেশের ষড়ঋতু - রচনা : ক্লাস 3, 4, 5

জলচর পাখি :

জলচর পাখির মধ্যে হাঁস অন্যতম। এরা দল বেঁধে চলাচল করে। মাছরাঙা ও পানকৌড়ি দক্ষ ডুবুরির মতো ডুব দিয়ে মাছ নিয়ে ভেসে ওঠে। এছাড়া বক, বেলে হাঁস, কাদা খোঁচা, গাঙচিল, চখাচখি ইত্যাদি পাখি জলচর পাখি হিসেবে পরিচিত।

পোষা পাখি :

দেখতে সুন্দর অথবা গানের গলা আছে এমন সব পাখিদের আমরা পুষে থাকি। পোষা পাখির মধ্যে ময়না, তোতা আমাদের শখের পাখি। এদের গায়ক পাখিও বলা হয়। এদেরকে প্রশিক্ষণ দিলে মানুষের মতো কথা বলতে পারে।

জাতীয় পাখি দোয়েল : 

একটি ছোট পাখি দোয়েল। এটি আমাদের জাতীয় পাখি। দোয়েলের মতো গানের গলা খুব কম পাখিরই আছে। উঠোনের পাশে ঝিঙে গাছের মাচায় দোয়েল লাফিয়ে বেড়ায় আর শিস দেয়। শীতের শেষে গরমের শুরুতে দোয়েল গানে গানে চারদিক মাতিয়ে তোলে।

উপসংহার :

পাখির দেশ বাংলাদেশ। অনেকে শখ করে পাখি শিকার করে থাকে। এতে করে অনেক পাখির প্রজাতি লুপ্ত হতে চলেছে। এসব পাখি আমাদের জাতীয় সম্পদ। আমাদের নিজেদের প্রয়োজনেই এদের সংরক্ষণ ও লালন করতে হবে।

Post a Comment

0 Comments

Bottom Post Ad