ভূমিকা :
বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রাচীন পুরাকীর্তি হলো মহাস্থানগড়। প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্বে এখানে সভ্য জনপদ গড়ে উঠেছিল বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। একসময় মহাস্থানগড় বাংলার রাজধানী ছিল। এখানে মৌর্য, গুপ্ত, পাল, সেন সাম্রাজ্যের প্রচুর নিদর্শন পাওয়া গেছে।
অবস্থান ও ইতিহাস :
মহাস্থানগড় বগুড়া শহর থেকে প্রায় আট মাইল উত্তরে করতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত। প্রাচীরঘেরা একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন । প্রাচীনকালে মহাস্থানগড়ের নাম ছিল পুণ্ড্রবর্ধন।
মহাস্থানগড় শব্দের 'মহা' অর্থ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আর 'গড়'অর্থ উচ্চ স্থান। ইতিহাস, ঐতিহ্য, ধর্মীয় ও প্রত্নতাত্ত্বিক কারণে এই স্থানের গুরুত্ব অনেক উঁচুতে। এটি ছিল বাংলার প্রাচীন শহরগুলোর একটি।
প্রত্নতাত্ত্বিক নিদ\র্শন :
মহাস্থানগড়ের উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত দেয়ালের উচ্চতা সমতল ভূমি থেকে প্রায় ৪.৫৭ মিটার। কোথাও কোথাও তা ১০.৬৭ মিটার উঁচু। এখানে একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ আছে। লোকমুখে তার নাম বৈরাগীর ভিটা। এর সঙ্গে আরও একটি ভিটা আছে তার নাম খোদার ভিটা ।
আরও পড়ুন :- রচনা : ঐতিহাসিক স্থান - ময়নামতি
মহাস্থানের প্রত্নস্থানে আছে দুটি জলাধার । একটির নাম জীয়ত কূপ বা জীবন কূপ, অপরটির নাম মানকলির কুণ্ড। এই দুই কূপের মাঝখানে রয়েছে পরশুরামের বাড়ি। এখানে বৌদ্ধধর্মের পাশাপাশি জৈন, হিন্দু ও পরবর্তীকালের ইসলামি সভ্যতার কিছু নিদর্শন পাওয়া গেছে।
মহাস্থানগড়ে যেসব নিদর্শন পাওয়া গেছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে শিলালিপি, ভাঙা মূর্তি, অলংকৃত ইট, ধাতুর তৈরি সূর্য ইত্যাদি। এসব নিদর্শন মহাস্থানগড় প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।
উপসংহার :
মহাস্থানগড় আমাদের সমৃদ্ধ অতীত ইতিহাসের সাক্ষী। দেশ ও জাতির ইতিহাস পূর্ণাঙ্গভাবে জানতে হলে এসব প্রত্নতাত্ত্বিক ক্ষেত্র সংরক্ষণ ও গবেষণা অব্যাহত রাখতে হবে।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্টের তালিকা