কাদারিয়া আভিধানিক অর্থ :-
কাদারিয়া (قدريه ) শব্দের মূল উৎস আরবি শব্দ قدر (কদর) । এর অর্থ শক্তি বা ক্ষমতা।
পারিভাষিক সংজ্ঞা :-
১. কাদারিয়া মতাবলম্বী হলো তারা, যারা বিশ্বাস করে যে, মানুষের কার্যক্ষমতা রয়েছে এবং তার সম্পাদিত কার্যের জন্য সে নিজেই দায়ী ।
২. রাসূল (স) কাদারিয়া সম্প্রদায়ের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছেন- القدريه مجوس هذه الامه অর্থাৎ, কাদারিয়ারা হচ্ছে এ উম্মতের অগ্নি উপাসক জাতি । নবীজী আরো বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে দুই শ্রেণির মানুষ এমন আছে, যাদের জন্য ইসলামের কোনো অংশ নেই । তারা হলো মুরজিয়া ও কাদারিয়া ।
৩. ঐতিহাসিকদের মতে, ভ্রান্ত মতবাদে বিশ্বাসী জাবারিয়া সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ ইসলামে কাদারিয়া সম্প্রদায়ের উদ্ভব হয়। প্রখ্যাত ইমাম হাসান আল বসরী এ মতবাদের বীজ বপন করেন। আর পরবর্তীতে তার শিষ্য মাবাদ আল জুহানী ৬৯৯ খ্রিস্টাব্দে এ সম্প্রদায়কে প্রতিষ্ঠা করেন ।
৪. ইমাম নবুবী (র) ও অন্যান্য আলেমের মতে, কাদারিয়া একটি ভ্রান্ত সম্প্রদায়ের নাম। তাদের পরিচয় হচ্ছে- هم الذين ينكرون القدر ويزعمون ان لا قدر وان الامر অর্থাৎ, যারা তাকদীরকে অস্বীকার করে এবং ধারণা করে যে, তাকদীর বলতে কোনো কিছু নেই এবং সকল জিনিস স্বাভাবিক নিয়মেই হয়ে থাকে ।
কাদারিয়া নামকরণের কারণ :-
১. এ সম্প্রদায়কে কাদারিয়া নামে অভিহিত করার কারণ বর্ণনায় ইয়াম নবুবী (র) বলেন- তাকদীরকে অস্বীকার করার কারণে এ সম্প্রদায়কে কাদারিয়া নামে অভিহিত করা হয়েছে ।
২. কতিপয় ঐতিহাসিক বলেন- قدريه শব্দটি আরবি قدر শব্দ হতে গৃহীত। আর قدر অর্থ শক্তি। এ সম্প্রদায়ের অনুসারীরা মানুষের ইচ্ছা ও কর্মের স্বাধীনতা শক্তিতে বিশ্বাসী ছিল বলে এদেরকে কাদারিয়া নামে অভিহিত করা হয়েছে।
মোটকথা, জাবারিয়াদের মতবাদের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ কাদারিয়া সম্প্রদায়ের উদ্ভব হয়েছে। মুক্ত ও স্বাধীন চিন্তার ইতিহাসে কাদারিয়া সম্প্রদায় উল্লেখযোগ্য। এ সম্প্রদায়কে কাফের বলা যাবে না । কেননা এদের উদ্দেশ্য হলো আল্লাহ তায়ালার পবিত্রতা ঘোষণা করা। তবে এদেরকে তথা পথভ্রষ্ট বলা যেতে পারে। সামাজিক জীবনযাপনে তাদের সাথে অসহযোগ প্রদর্শন করতে হবে।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরও পোস্টের তালিকা