স্বদেশের উপকারে নাই যার মন : ভাবসম্প্রসারণ - (৩টি)

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুগণ, তোমাদের শেখার সুবিধার্থে "স্বদেশের উপকারে নাই যার মন কে বলে মানুষ তারে পশু সেই জন" ভাবসম্প্রসারণটি ৩টি বই থেকে সংগ্রহ করে দেয়া হলো। তোমাদের কাছে যেটা সবচেয়ে সহজ মনে হয় সেটাই শিখে নিতে পারো। 

স্বদেশের উপকারে নাই যার মন ভাবসম্প্রসারণ- ১

মূলভাব : স্বদেশপ্রেম মানুষের একটি উন্নত আদর্শ। যার মধ্যে স্বদেশপ্রীতি নেই সে মানুষ হয়েও পশুর চেয়ে নিকৃষ্ট। 

সম্প্রসারিত ভাব : স্বদেশপ্রেম মানবজীবনের মহান বৈশিষ্ট্য। স্বদেশপ্রেমের এ বৈশিষ্ট্য যার মধ্যে অনুপস্থিত, তাকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গণ্য করা যায় না। দেশপ্রেমের মাধ্যমে মানুষের যথার্থ পরিচয় মেলে। জন্মভূমি স্বর্গ থেকেও শ্রেষ্ঠ। 

হাদিসে আছে, “জন্মভূমিকে ভালোবাসা ঈমানের অঙ্গ।” যারা দেশকে ভালোবাসেন এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন প্রকৃত প্রস্তাবে তারাই মানুষ নামের যোগ্য। জগতের মহামানবগণের প্রত্যেকেই স্বদেশভক্ত ও দেশের উপকারে নিবেদিতপ্রাণ। 

বীরপুরুষরা দেশের জন্য প্রাণ দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেন না। তাঁরা দেশের জন্য অকাতরে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে থাকেন। এরূপ ইচ্ছা যে ব্যক্তির নেই, সে মানুষ নামের অযোগ্য। নিজ মাতৃভূমিকে যে ভালোবাসে না, স্বদেশের জন্য যার কোনো অবদান নেই, মানুষ নামের জীব হয়েও সে বিবেক বুদ্ধিহীন পশুর তুল্য।

মন্তব্য : দেশমাতৃকার কল্যাণে যিনি আত্মোৎসর্গ করেন, তিনিই প্রকৃত মানুষ। পক্ষান্তরে, দেশের ভালোবাসায় যার মন নেই সে পশুতুল্য ।

আরও  পড়ুন :- স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন : ভাবসম্প্রসারণ

স্বদেশের উপকারে নাই যার মন ভাবসম্প্রসারণ- ২

মূলভাব : যে মাতৃভূমির কল্যাণ চায় না সে মানুষ নয়, পশু ।

সম্প্রসারিত ভাব : মানব জীবনের মহান বৈশিষ্ট্য স্বদেশকে ভালবাসা। স্বদেশ মানে নিজের দেশ। নিজের দেশ মানে মাতৃভূমি দেশপ্রেমে মানুষের যথার্থ পরিচয় মেলে। দেশ ও জাতির সেবায় নিজের জীবন উৎসর্গ করাই জীবনের সার্থকতা। দেশের কল্যাণে যে আনন্দিত হয় না, দেশের অকল্যাণে যে ব্যথিত হয় না সে সত্যিকারের মানুষ নয়, সে বিবেক বর্জিত পশু। 

যিনি নিবেদিত মনে দেশকে ভালবাসে এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেকে আত্মোৎসর্গ করে আসলে প্রকৃত মানুষ সেই, আসল দেশ প্রেমিক। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) নিজের দেশকে খুব ভালবাসতেন। তাইতো তিনি মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের সময় দু'চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বলেছিলেন- “হে আমার মাতৃভূমি তোমাকে ছেড়ে যেতে ওরা আমায় বাধ্য করেছে।” 

বীরপুরুষগণ দেশ ও জাতির জন্য জীবন বিসর্জন দিতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। তারা দেশের জন্য অকাতরে নিজের প্রাণ বিলিয়ে দিতে পারেন । মহান ভাষা আন্দোলনে আর স্বাধীনতা যুদ্ধে এদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ অকাতরে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়ে প্রমাণ করেছেন তারা দেশকে কত ভালবাসেন । 

মন্তব্য : দেশের কল্যাণে যিনি নিজের জীবন বিলিয়ে দেন তিনিই প্রকৃত দেশ প্রেমিক । যে দেশকে ভালবাসে না সে পশু, নরাধম। 

আরও  পড়ুন :- সংসার সাগরে দুঃখ তরঙ্গের খেলা : ভাব সম্প্রসারণ - ২ টি 

স্বদেশের উপকারে নাই যার মন ভাবসম্প্রসারণ - ৩

মূলভাব : যার দ্বারা নিজ দেশের কোনো উপকার হয়না সে মানুষ নয়। সে পশুর সমতুল্য।

সম্প্রসারিত ভাব : দেশপ্রেম মানুষের এক মহৎ গুণ। মানুষের কাছে স্বদেশের চেয়ে বড় আর কোনো কিছু হতে পারে না। কিছুকাল বিদেশে বাস করলে স্বদেশের জন্য প্রাণ কাঁদে। স্বদেশকে যারা ভালোবাসেন তাদের হৃদয় অপার আনন্দে ভরে যায়। স্বদেশকে যারা ভালোবাসে না, স্বদেশের জন্য যাদের প্রাণ কাঁদে না, তারা মনুষ্য নামের অযোগ্য। তাদের মতো নীচশয় ব্যক্তি আর হতে পারে না।

স্বদেশ আমাদের বায়ু দিয়ে, পানি দিয়ে ও খাদ্য দিয়ে বড় করে তোলে। অতএব স্বদেশের প্রতি আমাদের একটা বিরাট কর্তব্য রয়েছে। স্বদেশের উপকারের জন্য প্রয়োজন হলে আমাদের জীবন উৎসর্গ করতে হবে। যে ব্যক্তি স্বদেশের জন্য এভাবে চিন্তা করে না, সে অকৃতজ্ঞ। সে মানুষ নামের কলঙ্ক। 

সে পশুর সমান। তার বিবেক বলতে কিছুই নেই। সকলে তাকে ঘৃণা করে। যে স্বদেশকে ভালোবেসে স্বদেশের মঙ্গলের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করে সে-ই প্রকৃত মানুষ। যে স্বদেশকে অবজ্ঞা করে সে পশুর চেয়েও অধম আমাদের মনে রাখতে হবে, স্বদেশ প্রেম ঈমানের অঙ্গ। মা, মাতৃভাষা ও মাতৃভূমি এ তিনটি জিনিস সকল কিছুর উর্ধ্বে।

Post a Comment

0 Comments

Bottom Post Ad